সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ডকুমেন্ট, প্রক্রিয়া, সহজ পদ্ধতি

সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম, ডকুমেন্ট, প্রক্রিয়া, সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটির সম্পূর্ণ আপনাদের জন্য। 

সোনালী-ব্যাংক-একাউন্ট-খোলার-নিয়ম-ডকুমেন্ট-প্রক্রিয়া-সহজ-পদ্ধতি

আজকে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরব কিভাবে আপনারা সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলবেন এবং তার জন্য আপনাদের কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে, সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে, সোনালী ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টের চার্জ কত? এ সকল বিষয় নিয়ে আজকে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

পেজ সুচিপত্র ঃ সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, ডকুমেন্ট, প্রক্রিয়া, সহজ পদ্ধতি

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম, ডকুমেন্ট, প্রক্রিয়া, সহজ পদ্ধতি

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম, ডকুমেন্ট, প্রক্রিয়া, সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়বেন। সোনালী ব্যাংক আমাদের বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম ব্যাংক এবং এটি সরকারের আয়ত্তাভুক্ত। সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের শাখা ছড়িয়ে রেখেছে, সোনালী ব্যাংক যেকোনো সাধারণ জনগণের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে।


অন্যান্য ব্যাংকে তুলনায় সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ সরল ও নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলো মানতে পারলেই আপনি খুব সহজেই সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন। আজকের আমার আর্টিকেলটি হবে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম, ডকুমেন্ট, প্রক্রিয়া, সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে আশা করি আপনারা সকলে উপকৃত হবেন।

সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রকারভেদ সমূহ 

সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রকারভেদ সমাহার সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়বেন। সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে পূর্বেই ঠিক করে নিতে হবে আপনি কোন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে চান। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য কিছু একাউন্টের ধরন রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে।

প্রথমত সেভিংস একাউন্ট  : সেভিংস অ্যাকাউন্ট মূলত কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তার পরিবারের জন্য এটি ব্যক্তিগত সঞ্চয় একাউন্ট। এই সেভিংস একাউন্ট এর মধ্যে আপনি আপনার উপার্জনকৃত অর্থ দৈনিকভাবে সঞ্চয় করতে পারবেন। সেভিংস একাউন্ট এর মধ্যে যদি আপনি টাকা জমা করেন তাহলে তার মাধ্যমেও আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণে মুনাফা পাবেন।

কারেন্ট একাউন্ট  : মূলত যারা ব্যবসায়ী কারেন্ট একাউন্ট তাদের জন্য উপযুক্ত কারণ তারা এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই অনেক বেশি পরিমাণে টাকা লেনদেন করতে পারবে। ব্যবসায়ীরা মূলত এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলে কারণ তারা এই অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে তাদের ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ খুব সহজে লেনদেন করতে পারে বৈধ উপায়ে।

ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট : এই ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্টে মূলত আপনি কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জমা রাখবেন। এই জমাকৃত টাকা আপনি যখন ইচ্ছা তখন লেনদেন করতে পারবেন না। যখন আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা একটি নির্দিষ্ট সময়ে যেমন ( ১ বছর ) এর জন্য জমা রাখবেন সেই সময়ে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণে মুনাফা পাবেন।

ডলার একাউন্ট : যারা বাইরের দেশে বা বিদেশে কাজ করে বা ব্যবসা-বাণিজ্য করে মূলত ডলার একাউন্টটি তাদের জন্য রাখা হয়েছে। এই ডলার একাউন্ট এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার পরিবর্তে আপনারা দেশি মুদ্রা পাবেন।


সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহ 

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহ সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আজকে আমি আপনাদের সামনে সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরব। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে আসি সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

জাতীয় পরিচয় পত্র : শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংকে নয় আপনি বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার বাংলাদেশের নাগরিক সনদপত্র বা জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করতে হবে এই ডকুমেন্টটি ছাড়া কোন একাউন্ট খোলা সম্ভব নয়। ( আপনি যদি বিদেশি নাগরিক হন তাহলেও আপনি এই ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন তবে এর জন্য একটি ভিন্ন শর্ত রয়েছে। )

পাসপোর্ট প্রদান :  আপনি যদি বাংলাদেশে নাগরিক না হন অথবা আপনার যদি জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকে তাহলে আপনি আপনার পাসপোর্ট ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।

বয়স প্রমানকারি ডকুমেন্ট সমূহ  : আপনার বয়স যদি ১৮ বছর বয়সের নিচে হয় তাহলেও আপনি সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র এবং আপনার জন্ম সনদ প্রদান করতে হবে।

 ঠিকানা প্রমাণযোগ্য ডকুমেন্ট  : আপনি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সময় ফর্মে যে ঠিকানা দিবেন সে ঠিকানাটি অবশ্যই আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যার জন্য প্রমাণপত্র হিসেবে আপনাকে আপনার ঠিকানার বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল  অথবা পানির বিলের একটি কাগজ জমা করতে হবে।

পাসপোর্ট সাইজের ছবি : সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে কমপক্ষে  ২-৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা করতে হবে কারণ এটি আপনার অ্যাকাউন্টের ফাইল এর একটি অংশ হিসেবে গণ্য হবে।

ব্যাংক রেফারেন্স দিতে হবে : সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য যদি ব্যাংক ডিফারেন্ট প্রয়োজন হয় এক্ষেত্রে আপনি যদি সোনালী ব্যাংকের নতুন গ্রাহক হন এবং আপনার যদি ওই ব্যাংকের কোন গ্রাহকের সাথে পরিচয় থাকে তাহলে আপনি তার মাধ্যমে রেফারেন্স পেতে পারেন  অথবা অন্য কোন ব্যাংক দ্বারা আপনাকে রেফারেন্স নিতে হবে।

ইনকাম প্রুফ দিতে হয়  : আপনি যদি কোন ব্যবসায়ী বা সরকারি চাকরিজীবী হন এ ক্ষেত্রে আপনার ইনকাম প্রুভ দিতে হবে যেমন : সেলারি স্লিপ , ট্যাক্স রিটার্ন ইত্যাদি বিষয়।

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াসমূহ 

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সমূহ সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আমার আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়বেন। এখন আমি আপনাকে জানিয়ে দেবো কিভাবে আপনারা সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলবেন এবং কোন কোন প্রক্রিয়া বা ধাপের মধ্য দিয়ে আপনাদেরকে যেতে হবে।

 প্রক্রিয়া ১ : নির্দিষ্ট শাখায় গিয়ে একাউন্ট ফর্ম পূরণ করুন  : আপনার আশেপাশে সোনালী ব্যাংকের যে শাখা রয়েছে আপনি সেই শাখাতে গিয়েই আপনি আপনার পছন্দের একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম সংগ্রহ করবেন। এবং সেই ফর্ম এর মধ্যে আপনি আপনার ( নাম, ঠিকানা, পেশা, জাতীয়তা, যোগাযোগ নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য ) ইত্যাদি প্রদান করবেন।

প্রক্রিয়া ২ : ডকুমেন্টস জমা দিন  : ফ্রম টি ভালোভাবে পূরণ হয়ে যাওয়ার পর আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো যেমন ( আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি, আপনার পূরনকৃত ফর্ম, জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি ) ইত্যাদি সংযুক্ত করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার ডকুমেন্টগুলো ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করবে।

প্রক্রিয়া  ৩ : একাউন্ট খোলার পরের আনুষ্ঠানিকতা  : আপনার জমাকে তো ডকুমেন্টগুলি যখন যাচাই-বাছাই করা হয়ে যাবে তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য অনুমতি দিবে এবং অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনি প্রাথমিকভাবে একটি একাউন্ট নাম্বার, একটি চেক বই, একটি ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড পাবেন। আপনি যদি মনে করেন আপনি ইন্টারনেট ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিতে চান এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আলাদাভাবে ফরম পূরণ করতে হবে।

পর্যায়  ৪ : প্রাথমিক জমা প্রদান  : সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার পরেই সেখানে একটি প্রাথমিক জমা নেয়া হয় এটি সাধারণত আপনি যেই বিষয়ের ওপরে একাউন্ট খুলেছেন সেটির উপর নির্ভর করবে যেমন  ( সেভিংস অ্যাকাউন্ট ) এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রাথমিকভাবে জমা করতে হবে। তবে সোনালী ব্যাংকের অনেক শাখা রয়েছে যেখানে প্রাথমিক কোন জমা নেয় না।

সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে 

সোনালী ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে সে বিষয়ে জানতে হলে অবশ্যই আমরা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়বেন। সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য কত টাকা লাগে এটি নির্ভর করবে আপনি ঠিক কেমন অ্যাকাউন্ট খুলতে চান তার ওপরে। প্রতিটি অ্যাকাউন্ট এর জন্য আলাদা আলাদা চার্জ রয়েছে।

সঞ্চয় একাউন্ট বা সেভিংস একাউন্ট : সোনালী ব্যাংকের সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট বা সেভিংস একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে প্রথমে প্রাথমিকভাবে  ৫০০ টাকা জমা প্রদান করে একাউন্টটি কে চালু করতে হয়।

কারেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য  : কারেন্ট একাউন্ট বা চালু একাউন্ট কিংবা ব্যবসায় অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম ১০০০ টাকা প্রদান করে অ্যাকাউন্টটি খুলতে হয়। 

ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট  : কোন ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট খোলার পরে প্রাথমিকভাবে কোন টাকা জমা দিতে হয় না আপনি ফ্রিতে যত টাকা রাখতে চান সেটি একবারে জমা দিয়ে মেয়াদ নির্দিষ্ট করে রাখতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাফিকা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url